আপনাকে কুষ্টিয়াশহর.কম এর পক্ষ হতে ঈদ মোবারক 🌙। বাংলা তথ্য ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে আমাদের এই প্রয়াস। ইতিহাস এবং ঐতিহ্যর তথ্য দিতে চাইলে ক্লিক করুন অথবা ফোন করুনঃ- ০১৯৭৮ ৩৩ ৪২ ৩৩

Select your language

লালনের আদর্শে আধুনিক দেশ ও সমাজ গড়ে তুলতে হবে
লালনের আদর্শে আধুনিক দেশ ও সমাজ গড়ে তুলতে হবে

জাতীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, সবকিছুর উর্দ্ধে মানুষ ও মানবতা। জাত-পাতের কোন মূল্য নেই, মূল্য শুধু মানবতার। তাই সবার আগে নিজেদের মধ্যে হানাহানী বাদ দিয়ে সাম্প্রদায়িকতার উর্ধে থেকে মানুষের কল্যাণে নিবেদিত হতে হবে।

বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের কোন ধর্ম ও জাত ছিলনা। লালনের একটি মাত্র পরিচয় ছিল সেটি হচ্ছে মানবতার সেবক। তিনিই একমাত্র বাউল সাধক যিনি সকল ধর্মের সীমাবদ্ধতাকে ছাড়িয়ে সদা সত্য পথে চলতে মানুষকে মানবতাবাদীর পথে ডাক দিয়ে ছিলেন। তাই একজন প্রকৃত মানুষ হতে হলে লালন সাঁইয়ের আদর্শে অনুপ্রানিত হয়ে নিজেতে সোনার মানুষ হতে হবে। আমাদের লালন সাঁইয়ের আদর্শের প্রেরণাকে কাজে লাগিয়ে আধুনিক দেশ ও সমাজ গড়ে তুলতে হবে। গতকাল বুধবার রাতে বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের ছেঁউড়িয়ার আখড়া বাড়ীতে লালন একাডেমির আয়োজনে বাউল সম্রাটের ১২৯তম তিরোধান দিবসের ৩ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, তিনি অহিংস মানবতার ব্রত নিয়ে মানুষের কল্যাণে অসংখ্য গান সৃষ্টি করে গেছেন লালন সাঁই । তাঁর এই অমর সৃষ্টি সঙ্গীত কোন ধর্মের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। সকল ধর্মের উর্ধে থেকে সম্প্রীতির বাধনে আবদ্ধ করতে মরমী এই সাধক মানব মুক্তির জন্য সৃষ্টি করেছিলেন ফকিরী মতবাদ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু লালনের আর্দশে অনুপ্রাণীত হয়ে সেদিন সম্প্রীতির বন্ধনকে আরো দৃঢ় করে তুলতে বলেছিলেন ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আজকের যুগে তাঁর এই আহবান একেবারেই বাঙালী জাতির জন্য সমকালিন। তাই আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে লালনের আর্দশে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি।

তিনি বলেন, অতি সম্প্রীতি বুয়েটে কুষ্টিয়ার কৃতিসন্তান আবরার ফাহাদকে তার সহপাঠিরা নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে। যা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এখনো আবরারের মায়ের কান্না আমার হৃদয়কে ব্যথিত করেছে। আমাদের ছাত্র রাজনীতি কোথায় যেয়ে দাড়াচ্ছে। একশ্রেণীর শিক্ষকরা তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য এসব মেধাবী ছাত্রদের ব্যবহার করছে। আবরার ফাহাদকে হত্যার ঘটনা সারা দেশকে নাড়িয়ে তুলেছে এবং শিঙ্গাঙ্গনে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবী সোচ্চার হয়। আমি মনে করি ছাত্র রাজনীতি বন্ধ নয়, সবার আগে শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ করতে হবে এবং এটি বড় জরুরী। নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য দলীয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমরা কোন শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছি। কর্মজীবনে প্রবেশ করেই নিজের আদর্শ ব্যক্তিত্ব বিসর্জন দিয়ে আপাদমস্তক দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হচ্ছি। আমরা সেই মানুষ চাই যে লালন সাঁইয়ের আদর্শে অনুপ্রানিত হয়ে দুর্নীতি থেকে বেরিয়ে এসে দেশ ও জাতির কল্যাণে নিবেদিত হবে। তিনি বলেন, ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেক নোংরা রাজনৈতিক খেলার চেষ্টা করেছেন রাজনীতিবিদরা। মানুষের দূর্বলতা নিয়ে পরিবেশ ঘোলা করবেন না। মানুষ আর তাদের ধোকায় পা দিবে না। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং সোনার বাংলা গড়তে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে পাশে থাকতে হবে। তিনি সাংস্কৃতিক রাজধানী খ্যাত কুষ্টিয়ার মানুষের দাবীর মুখে বলেন বাউল সম্রাট মরমী সাধক লালন সাঁইয়ের নামে কুষ্টিয়াতে লালন বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার সকল আয়োজন করা হবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই আগত অতিথিদের কুষ্টিয়া লালন একাডেমীর পক্ষ থেকে ফুলের তোড়া, ক্রেষ্ট ও আত্মসুদ্ধির প্রতীক একতারা উপহার দিয়ে বরণ করে নেন। আলোচনা শেষে প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ “আপন ঘরের খবর” নামে একটি স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উম্মোচন করেন।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনের এমপি আঃ কাঃ মঃ সরওয়ার জাহান বাদশা, কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালি) আসনের এমপি ব্যারিষ্টার সেলিম আলতাফ জর্জ, খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি ড. খঃ মহিদ উদ্দিন, কুষ্টিয়ার পুলিশ এস এম তানভির আরাফাত, কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী রবিউল ইসলাম, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব সদর উদ্দিন খান, সাধারন সম্পাদক আজগর আলী, পিপি এ্যাডঃ অনুপ কুমার নন্দী প্রমুখ। মুখ্য আলোচক হিসেবে আলোচনা করেন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমান, আলোচক লালন মাজারের প্রধান খাদেম মহম্মদ আলী। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখবেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আজাদ জাহান। স্বাগত বক্তব্য রাখবেন লালন একাডেমির এডহক কমিটির সদস্য সচিব এনডিসি এম এ মোহাইমিনুল জিলান।

আলোচনা শেষে দ্বিতীয় পর্বে লালন মঞ্চে বিভিন্ন শিল্পি ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ে পরিবেশিত হয় লালন সংগীতি। এতে উদ্বোধনী প্রার্থনা সংগীত পরিবেশন করেন পরম শ্রদ্ধেয় গুরু নহির শাহ ও তার ভেগধারী বাউল ফকিরগণ। এরপর পরই স্থানীয় শিল্পীবৃন্দ লালন সঙ্গীত পরিবেশন করেন। গভীর রাত পর্যন্ত চলে এই সংগীত পরিবেশন। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন কনক চৌধুরী।

তথ্য সুত্রঃ- আরিফ মেহমুদ - আন্দোলনের বাজার

Add comment

ইতিহাস এর নতুন প্রবন্ধ

সর্বশেষ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

তথ্য সম্পর্কে খবর

আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন এবং আপডেট থাকুন
আমরা কুকিজ ব্যবহার করি
আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে কুকিজ ব্যবহার করি। তাদের মধ্যে কিছু সাইট পরিচালনার জন্য অপরিহার্য, অন্যরা আমাদের এই সাইট এবং ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা উন্নত করতে সাহায্য করে (কুকিজ ট্র্যাক করা)। আপনি কুকিজকে অনুমতি দিতে চান কিনা তা আপনি নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। দয়া করে মনে রাখবেন যে আপনি যদি সেগুলি প্রত্যাখ্যান করেন তবে আপনি সাইটের সমস্ত কার্যকারিতা ব্যবহার করতে পারবেন না।