আপনাকে কুষ্টিয়াশহর.কম এর পক্ষ হতে ঈদ মোবারক 🌙। বাংলা তথ্য ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে আমাদের এই প্রয়াস। ইতিহাস এবং ঐতিহ্যর তথ্য দিতে চাইলে ক্লিক করুন অথবা ফোন করুনঃ- ০১৯৭৮ ৩৩ ৪২ ৩৩

Select your language

লালন কথা – ৫ম পর্ব
লালন কথা – ৫ম পর্ব

লালন একাডেমীর খাদেম নিজাম উদ্দিনের বয়স বর্তমানে ৮৫ বছররের উপরে, তাঁকে লালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায় আমার দাদাগুরু ভোলাই শাহের কাছে শুনেছি লালন রাতের বেলা দুধ দিয়ে খই ভিন্ন অন্য কোন খাদ্য খেতেন না। প্রায় সারারাত জেকের আসকার ও এবাদত করতেন, একটু পর পর পান খেতেন।

তখন আঁখরাবাড়িতে পানের বরজ এবং অনেক ঝোপজঙ্গল ছিলো। ভক্তরা ভারতের গয়া থেকে ফকির লালনের জন্য চুন নিয়ে আসতো, সেই চুনে তিনি পান খেতেন। এই প্রসঙ্গে তিনি আরো জানান যে, নবদ্বীপ থেকে এখনো কিছু কিছু লালনভক্ত আখড়ায় আসে, তাঁদের কাছে সে শুনেছে যে নবদ্বীপে গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর ধামে লালন ও তাঁর শিষ্যদের যে চুনসেবা দেয়া হয়েছিলো সেই চুন সেবায় লালনের যে আসন পাতা ছিলো তা এখনো সংরক্ষিত আছে।

নিজামুদ্দিনের ধারণা, হয়তো দোল পূর্ণিমার তিথিতে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন বলেই লালন তাঁর জীবদ্দশায় ফাল্গুন মাসের দোল পূর্ণিমার রাতে খোলা মাঠে শিষ্যদের নিয়ে সারারাত ধরে গান বাজনা করতেন। সেই ধারাবাহিকতায় এখনো লালন একাডেমীর প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের দোল পূর্ণিমার রাতে তিনদিন ব্যাপী লালন স্মরণউৎসব এর আয়োজন করে থাকে।

লালন চত্বর ছাড়াও আঁখড়ার অভ্যন্তর ভাগ সহ সর্বত্র দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা হাজার হাজার বাউলরা ছোট ছোট দলে সারারাত ধরে গান করে। এছাড়া প্রতি বছর ১লা কার্ত্তিকে লালনের মৃত দিবস উপলক্ষে অনুরূপ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। দেশ বিদেশের হাজার হাজার বাউল যোগ দেয় সেই উৎসবে, দোল পূর্ণিমার জ্যোৎস্নায় বাউলরা আকাশের দিকে হাত তুলে গান ধরে ---

এলাহি আল আমিনগো আল্লাহ বাদশা আলমপানা তুমি।
ডুবাইয়ে ভাসাইতে পারো, ভাসাইয়ে কিনার দাও কারোও
রাখো মারো হাত তোমার, তাইতে তোমায় ডাকি আমি।।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে লালনের যথেষ্ঠ সখ্যতা ও ভাব্বিনিময় ছিলো। জমিদারীর তাগিদেই রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহের কুঠি বাড়িতে থাকতেন, পদ্মার পাড়ের নির্জনতায় বসে কাব্য রচনা করতেন। ফকির লালনের সাথে যখন তাঁর পরিচয় ঘটে তখন তিনি বয়সে তরুন। তিনি একবার লালনের আখড়ায় এসেছিলেন, গভীর অথচ সহজ ভাষায় বাঁধা লালনের গান তাঁকে মুগ্ধ করেছিলো, সেই থেকেই তাঁদের মধ্যে ভাবের লেনদেন। রবীন্দ্রনাথ কোথাও যেতে হলে পালকি ব্যবহার করতেন, লালন ফকির ঘোড়ায় চড়তেন।

লালন ফকির ঘোড়ায় চড়েই কুঠি বাড়ি দু-একবার এসেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ মাঝে মাঝেই তাঁর বোট নিয়ে পদ্মায় ঘুরে বেড়াতেন। রবীন্দ্রনাথ এর সেজদা জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর সেই বোটে বসা ভ্রমণরত ফকির লালনের একটি স্কেচ এঁকে ফেলেন জার একটি কপি এখনো লালন একাডেমীর মিউজিয়ামে রক্ষিত আছে।

Add comment

ইতিহাস এর নতুন প্রবন্ধ

সর্বশেষ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

তথ্য সম্পর্কে খবর

আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন এবং আপডেট থাকুন
আমরা কুকিজ ব্যবহার করি
আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে কুকিজ ব্যবহার করি। তাদের মধ্যে কিছু সাইট পরিচালনার জন্য অপরিহার্য, অন্যরা আমাদের এই সাইট এবং ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা উন্নত করতে সাহায্য করে (কুকিজ ট্র্যাক করা)। আপনি কুকিজকে অনুমতি দিতে চান কিনা তা আপনি নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। দয়া করে মনে রাখবেন যে আপনি যদি সেগুলি প্রত্যাখ্যান করেন তবে আপনি সাইটের সমস্ত কার্যকারিতা ব্যবহার করতে পারবেন না।