আপনাকে কুষ্টিয়াশহর.কম এর পক্ষ হতে প্রবিত্র রমজান মোবারক 🌙। বাংলা তথ্য ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে আমাদের এই প্রয়াস। ইতিহাস এবং ঐতিহ্যর তথ্য দিতে চাইলে ক্লিক করুন অথবা ফোন করুনঃ- ০১৯৭৮ ৩৩ ৪২ ৩৩

Select your language

খন্দকার আব্দুল ওয়াহেদ - একজন সংগ্রামী জননেতা ছিলেন
খন্দকার আব্দুল ওয়াহেদ - একজন সংগ্রামী জননেতা ছিলেন

পুর্ব পুরুষ নদীয়া বেথুয়া ডহরী থেকে আসেন। মহম্মদ শাহী পরগনার মালিক ছিলেন, গউস বিলা পূর্বের নাম বর্তমান নাম ঘোষবিলা। কামেল ব্যক্তি দুই ভাই একজন বাগু দেওয়ান। উনার মাজার আলামপুর, অপর জনের মাজার ঘোষ বিলাতে তার নাম ফয়েজ উদ্দিন।

ফয়েজ উদ্দিন আহম্মেদ তার পুত্র। জমির উদ্দিন আহাম্মেদ তার পুত্র একিন আলী। একিন আলীর পুত্রগন খন্দকার ইছহাক, খন্দকার শাহাদত, খন্দকার কওছের, খন্দকার নওসেদ। ইছাহাক আলীর পুত্র খন্দকার মাহাবুব। খন্দকার শাহাদত আলীর পুত্র খন্দকার আব্দুল ওয়াহেদ। খন্দকার নওসেদ আলীর পুত্র খন্দকার মনোয়ার হোসেন (সৌদিতে ব্যবসা করেন)।

খন্দকার আব্দুল ওয়াহেদ এর জন্ম ১৯১২ সালে ১ লা জানুয়ারী ঝাউদিয়া মামা বাড়ীতে। নানা কফিল উদ্দিন আহাম্মেদ। প্রাথমিক শিক্ষা গ্রামের স্কুলে। গোস্বামী দূর্গাপুর হাইস্কুল থেকে ১৯৩৭ সালে ম্যাট্রিক পাশ করেন। বঙ্গবাণী কলেজ কলকাতা থেকে ১৯৪০ সালে আই,এ পাশ করেন। পিতার মৃত্যুর কারনে পড়া বন্ধ হয়ে যায়।

ঐ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ইসলামিয়া কলেজের ছাত্র। ছাত্র আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ে। ষ্টুডেন্ট ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া (এস,এফ,আই) এতে যোগ দেয়। কুচবিহারের শ্যামলিগন্ধে তার বাবার ব্যবসা ছিলো। প্রতি রবিবারে কুচবিহারে তাদের বাড়িতে মজলিশ হত। হিন্দু, মুসলিম, খৃষ্টান সবাই আসত। সেখানে এক কমিনিস্ট পার্টির সদস্য ছিলো। তার কাছ থেকে রাজনীতিতে হাতেখড়ি। প্রথমে ওয়ারলেস অপারেটরের চাকুরী নেন। তখন বিশ্বযুদ্ধ শুরু। চাকুরী করা কালে অভিযোগ আসে জাপানের সাথে খন্দকার আব্দুল ওয়াহেদের যোগাযোগ আছে। জাহাজের ওয়ারলেস অপারেটর থাকা কালে।

জাহাজের আইরিশ ম্যাকানিক অভিযোগ করে বাইরের শত্রু পক্ষের সাথে যোগাযোগ আছে। ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গে বিচার হয়। বিচারে মামলায় খালাশ হয়ে যায়, কিন্তু চাকুরী থেকে অব্যাহতি দেয়। তারপর ইষ্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়েতে ষ্টেশন মাষ্টার কোর্সে ট্রেনিং নেয়। লক্ষ্ণৌ ডিভিশনে পোষ্টিং হয়। হালসা ষ্টেশন সাথে মিউচুয়াল ট্রান্সফার হয়। ১৯৪৫ সালে ট্রেড ইউনিয়ন রেলওয়ে ওয়ার্কাস এর সদস্য ও জোনাল কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ঐ সময় আসামে। ১৯৪৬ সালে প্রাদেশিক বিধান সভার নির্বাচনে অবিভক্ত বাংলার প্রার্থী জ্যোতি বসু। মুসলিম লীগের জমির উদ্দিন প্রধান, কংগ্রেসে হুমায়ন কবির প্রার্থী হন। জ্যোতি বসু নির্বাচিত হন।

১৯৪৭ সালে দেশ ভাগ হয়। পাকিস্তানের চাকুরী করার পক্ষে খন্দকার আব্দুল ওয়াহেদ মতামত দেন। লালমনিরহাটে ষ্টেশন মাষ্টারে পোষ্টিং। এস,এ সোহরাওয়ার্দি তখন চট্টগ্রাম জোনে জেনারেল ম্যানেজার ছিলেন। মিথ্যা ডিক্লিয়ারেশন দিয়ে অনেকে চাকুরীতে জয়েন করেন। সেই সময় ১৬ ঘন্টার বেশি কাজ করতে হত। ট্রেড ইউনিয়নের নেতা হিসাবে তিনি তাই প্রতিবাদে নামেন। সারা দেশ ব্যাপী আন্দোলন শুরু হয়। রেলওয়ে কতৃপক্ষ কান না দেওয়ায় একদিন অনুপস্থিত থাকেন। শান্তাহার থেকে লালমনিরহাট সমস্ত ট্রেন বন্ধ হয়ে যায়। তাকে তলব দেওয়া হয়। তার বক্তব্য তুলে ধরেন অনুপস্থিতির পক্ষে অসুস্থতার কথা বলায় তাকে মেডিক্যাল অফিসারের কাছে পাঠায়। বিভিন্ন যায়গায় বদলী করতে থাকে।

বোনার পাড়া থাকা অবস্থায় তাকে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হয়। ওয়েল ফেয়ার অফিসার R.N বাগচী তাকে চাকুরী ফেরত দিতে বলে কিন্তু D.T.S ট্রাফিক সুপারিনটেন্ডেন্ট সালাউদ্দিন আহাম্মেদ চাকুরী ফেরত না দেওয়ায় তিনি চাকুরী বাদ দেন। বৈষম্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে চাকুরী বাদ দিলেও জসিম মন্ডল, ফরিদপুরের মখলেছুর রহমান এদের সাথে আন্দোলন করতে থাকেন পরে কুষ্টিয়া এসে মোহিনী মিলে চাকুরী নিয়ে ১৯৫১ সালে ট্রেড ইউনিয়নের সেক্রেটারী হন। মোহিনী মিলের আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ে।

নন্দ স্যান্যাল (ওরফে সুধীর স্যান্যাল), শেখ রওশন আলি, গারীস উল্লাহ সরদার, এদের সাথে আন্দোলন করেন। ১৯৫৩ সালে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে সৈয়দ আলতাফ হোসেন নমিনেশন পান। তারপক্ষে তিনি কাজ শুরু করেন। ১৯৫৩ সালের প্রথমদিকে মাওলানা ভাসানী কুষ্টিয়ায় আসেন, যুক্তফ্রন্ট গঠনের দাবী ওঠে। তার আগে যুক্তফ্রণ্ট ছিলো না।

নির্বাচনের কাজ করার কারনে তিনি ১৯৫৩ সালের নভেম্বরে আটক হন। দেওয়ান আহমেদ, আব্দুল কাইয়ুমও আটক হন। পাবনা জেলে পাঠায়। নির্বাচনের পর ১৯৫৪ সালের জুন মাসে মুক্তি পান। ১৯৫৪ সালের নভেম্বরে আবার গ্রেফতার হন। তখন রাজশাহী জেলে পাঠায়। ১৯৫৫ সালে খাপড়া ওয়ার্ডে আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। কয়েদিদের দিয়ে ঘানি টানাত। ঐ আন্দোলনের পর ঘানি টানানো বন্ধ হয়ে যায়। আন্দোলনে কতৃপক্ষ গুলি চালায়।

হানিফ, দেলওয়ার, সুখেন শহীদ হন। ওখান থেকে খন্দকার আব্দুল ওয়াহেদ কে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে পাঠায়। ১৯৫৬ সালের মার্চে মুক্তি পান। তিনি সুতাকল মজদুর ইউনিয়নের সেক্রেটারী ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত ছিলেন এবং ইষ্ট পাকিস্তান মজদুর ফেডারেশন হওয়া পর্যন্ত ঐ পদে ছিলেন। ১৯৬৪ সালের আগষ্ট মাসে পুনরায় গ্রেফতার হন এবং ১৯৬৬ সালে ছাড়া পান। যশোর সেন্ট্রাল জেলে ছিলেন। ১৯৫১ সালে মোক্তারী পাশ করেন।

কুষ্টিয়া বারে Enrolment হন। মজদুর ফেডারেশন পরে ১৯৭১ সালে T.U.C সৃষ্টি হয়। তিনি কুষ্টিয়া তে T.U.C গঠন করেন, রওশন আলি সভাপতি তিনি সেক্রেটারী। T.U.C তে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ছিলেন। সমাজবাদী দলের সংযুক্ত ফেডারেশনে কুষ্টিয়ার সভাপতি কেন্দ্রের সিনিয়র সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ কৃষক সভার সভাপতি, Scop এর সেন্ট্রাল কমিটির সদস্য ছিলেন। সরকার পক্ষ ও শ্রমিক পক্ষের বিরোধ মীমাংসায় বিশেষ ভূমিকা রাখেন।

কুষ্টিয়া জেলা আইনজীবী সমিতি ২ বার সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৭ সালে, ও পুর্বে একবার, তখন মাসুদরুমী সাহেব সভাপতি নির্বাচিত হন। খন্দকার আব্দুল ওয়াহেদ সাহেবের তিন পুত্র এক কন্যা। পুত্র মাজেদুর রহমান বুয়েটের ইঞ্জিনিয়ার আমেরিকায় চাকুরী করে। অন্যপুত্র সাজেদুর রহমান মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কুষ্টিয়া জেলা কমান্ডার ছিলেন।

খন্দকার আব্দুল ওয়াহেদ ১৯৬৮ সালে জেলে যান এবং ১৯৬৯ সালে মুক্তি পান। আবার ঐ বছর মোহিনী মিলে ঘেরাও আন্দোলনে গ্রেফতার হন। তিনি মোট ৯ বছর জেল খেটেছেন। ১৯৮২ সালে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে ১ দিন জেল খাটেন। কুষ্টিয়া বারের সমস্ত আইনজীবীর চেষ্টায় জামিন পান। তিনি ৬ই নভেম্বর ২০০৭ মৃত্যবরন করেন।

Add comment

কুষ্টিয়া সম্পর্কিত তথ্য

সর্বশেষ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

তথ্য সম্পর্কে খবর

আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন এবং আপডেট থাকুন
আমরা কুকিজ ব্যবহার করি
আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে কুকিজ ব্যবহার করি। তাদের মধ্যে কিছু সাইট পরিচালনার জন্য অপরিহার্য, অন্যরা আমাদের এই সাইট এবং ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা উন্নত করতে সাহায্য করে (কুকিজ ট্র্যাক করা)। আপনি কুকিজকে অনুমতি দিতে চান কিনা তা আপনি নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। দয়া করে মনে রাখবেন যে আপনি যদি সেগুলি প্রত্যাখ্যান করেন তবে আপনি সাইটের সমস্ত কার্যকারিতা ব্যবহার করতে পারবেন না।