আপনাকে কুষ্টিয়াশহর.কম এর পক্ষ হতে প্রবিত্র রমজান মোবারক 🌙। বাংলা তথ্য ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে আমাদের এই প্রয়াস। ইতিহাস এবং ঐতিহ্যর তথ্য দিতে চাইলে ক্লিক করুন অথবা ফোন করুনঃ- ০১৯৭৮ ৩৩ ৪২ ৩৩

Select your language

গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়নের রুপকার - কামরুল ইসলাম সিদ্দিক
গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়নের রুপকার - কামরুল ইসলাম সিদ্দিক

কামরুল ইসলাম সিদ্দিক (জন্মঃ ২০ জানুয়ারি ১৯৪৫, মৃত্যুঃ ১ সেপ্টেম্বর ২০০৮) বাংলাদেশের গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়নের রুপকার সাবেক সচিব প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম সিদ্দিক ১৯৪৫ সালের ২০ জানুয়ারি কুষ্টিয়ায় জন্ম গ্রহন করেন। পিতা কৃষি উন্নয়নে আমৃত্যু সংগ্রামী যোদ্ধা মরহুম নুরুল ইসলাম সিদ্দিক এবং সমাজ সেবী রত্নগর্ভা মা হামিদা সিদ্দিকার সন্তান। সিদ্দিকের শৈশব ও শিক্ষা জীবনের প্রথম অধ্যায় লালন শাহ, রবীন্দ্রনাথ এবং মীর মোশাররফ হোসেনের স্মৃতিবিজড়িত কুষ্টিয়ায়। নিজস্ব ধ্যান ধারনাকে বিশ্ব প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে দেশউপযোগী প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রাম বাংলার যুদ্ধ বিদ্ধস্ত অবকাঠামো উন্নয়নে তিনি প্রানান্ত কাজ করেছেন।

বিশিষ্ট সমাজ সেবক, মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক ও আন্তর্জাতিক খ্যতিমান প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম সিদ্দিক। তিনি ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো অর্ডিনেশন বোর্ড, ডি,টি,বি,সির নির্বাহী পরিচালক ছিলেন। তিনি গৃহায়ন ও গনপুর্ত মন্ত্রনালয়ের সাবেক সচিব। তিনি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের [এলজিইডি] প্রতিষ্ঠাতা। তিনি এলজিইডির চীফ ইঞ্জিনিয়ার থাকাকালীন অবস্থায় দেশের গ্রামীন অবকাঠামো ও সামাজিক উন্নয়নে ঐতিহাসিক ভুমিকা রাখেন। এ অন্নচলের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে ও বেকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন অবদান রেখেছেন।

কুষ্টিয়া মিশন স্কুল ও সিরাজুল হক মুসলিম হাই স্কুলে তার বিদ্যালয় জীবন অতিবাহিত হয়। ১৯৬০ সালে তিনি ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। কুষ্টিয়া কলেজ থেকে তিনি ১৯৬২ সালে আই এস সি পাশ করেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয় অংশগ্রহন করেন। ১৯৭৩ সালে তিনি পৌর প্রকৌশলী হিসাবে খুলনা মিউনিসিপ্যালিটিতে বদলি হয়ে যান। প্রখ্যাত সুফি সাধক কাজী আবু মোকাররম ফজলুল বারীর কন্যা সাবেরা সিদ্দিকার সাথে ১৯৭৪ সালে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

১৯৭৫ সালের শেষের দিকে তিনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করেন। ইংল্যান্ডের শেফিল বিশ্ববিদ্যালয়ের টাউন এন্ড রিজিওন্যাল প্লানিং এ মাষ্টার্স ডিগ্রী অর্জনের জন্য তিনি ১৯৭৬ সালে ইংল্যান্ডে যান। ইংল্যান্ড থেকে মাষ্টার্স ডিগ্রী অর্জন করে বাংলাদেশে ফিরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগে [এলজিইডি] গুরুত্বপুর্ন দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পিডিবির চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আলোচিত গুলিস্থান যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার প্রকল্পের মুল পরিকল্পনাকারী। ঢাকাস্থ কুষ্টিয়া জেলা সমিতি তাকে উন্নয়ন সারথী পদক ২০০২ প্রদান করেছে। তিনি ঢাকাস্থ কুষ্টিয়া সমিতির সভাপতি।

সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী লাভ করার পর তিনি ১৯৬৭ সালে সহকারী প্রকৌশলী [ওয়ার্কাস প্রোগ্রাম] হিসেবে কুষ্টিয়াতে তার কর্মজীবন শুরু করেন।

কামরুল ইসলাম সিদ্দিক এমএসসি ইঞ্জিনিয়ার। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের পুর্বে কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে সংগঠনের দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তার চাকুরিতে উন্নতি শুরু হয়। বিশ্বের দাতা দেশগুলোর আস্থা অর্জন করেন এবং দাতা দেশ গুলো তাকে বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে গ্রহন করেন।

যুদ্ধবিধস্ত দেশকে গড়তে স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়ন প্রয়োজন। সেদিকে তিনি মনোনিবেশ করেন এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী ব্যুরোর প্রধান প্রকৌশলী পদে অধিষ্ঠিত হন। পরবর্তীতে নাম পরিবর্তন হয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর [এলজিইডি] এর প্রধান প্রকৌশলী থাকা অবস্থায় কুষ্টিয়া সহ সারা দেশের প্রতিটি গ্রামের প্রতিটি রাস্তা পাকা করেছেন, ব্রীজ, কালভার্ট, পাকা অবকাঠামো তৈরি করে অভুতপুর্ব উন্নয়ন সাধন করেন।

১৯৮৭ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের শেফিড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরবান এন্ড রিজিওন্যাল প্লানিং মাষ্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম সিদ্দিক ১৯৯১ সালে চেয়ারম্যান হিসেবে পি,ডি,বিতে যোগদান করেন। যোগদান করে বিদ্যুৎ চোর [শিল্পপতিদের] ধরতে শুরু করলে ঐ পদে আর থাকতে পারেন নাই।

কৃষিক্ষেত্রে শুষ্ক মৌসুমে পানি সংরক্ষন করে ইরি চাষের মাধ্যমে খাদ্য চাহিদা পুরনে অংশগ্রহন মুলক পানি ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে তিনি বাংলাদেশে Ruber Dam প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য রাবার ডাম স্থপন করেন। জেলা উপজেলা এমনকি এমনকি ইউনিয়নগুলোর ম্যাপ প্রস্তুতির জন্য জিয়াইএস [গ্রাফিক্স ইনফরমেশন সিষ্টেম] চালু করেন। তার সময় গুরুত্বপুর্ন প্রকল্প জাইকার সাহায্যপুষ্ট আদর্শ গ্রামীন উন্নয়ন প্রকল্প অত্যন্ত সাফল্যের সাথে সমাপ্ত হয়।

২০০৩-২০০৪ মেয়াদে কামরুল ইসলাম সিদ্দিক গ্লোবাল ওয়াটার পার্টনারশীপ সাউথ এশিয়া রিজিয়নের প্রথম চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হন। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ ওয়াটার পার্টনারশীপ এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল ফোরাম ফর রুবাল ট্রান্সপোর্ট ডেভেলপমেন্টের প্রেসিডেন্টের দায়িত্বপালন সহ সামাজিক কর্মকান্ডের সঙ্গে ব্যাপকভাবে নিজেকে সমপৃক্ত রেখেছেন। তার প্রচেষ্টায় কুষ্টিয়ার জগতি ইউনিয়নের বরিয়া গ্রামে তার মায়ের নামে হামিদা সিদ্দিক কলেজিয়েট স্কুল এবং পিতার নামে নুরুল ইসলাম সিদ্দিক এতিমখানা গড়ে উঠেছে।

২০০৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর আমেরিকার নিউ জার্সিতে ইন্তেকাল করেন।

Comments  
চাইলে স্যারের স্মারক গ্রন্থের একটি কপি আমার কাছ থেকে সংগ্রহ করতে পারেন। এলজিইডি সদর দপ্তরের ডিজাইন ইউনিটে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন। গ্রন্থটির ভূমিকা করেছেন- প্রফেসর ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী স্যার। এটা নিঃসন্দেহে আপনার অনেক কাজে লাগবে।
উদ্দ্যোগটি নিসন্দেহে খুব ভাল, তবে অনুরোধ, দয়া করে তথ্য বিভ্রাটের বিষয়টি অবশ্যই স্পর্শকাতর। তাই তথ্যের তারতম্য নিরসনে, সঠিক তথ্য প্রদান করে উদ্দেশ্যকে সফল করতে দয়া করে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। আমি মোঃ ফেরদৌস আলী, এ কিংবদন্তির একনিষ্ঠ সানিধ্যে থেকে দআম :roll:

মোঃ ফেরদৌস আলী, সাবেক ব্যক্তিগত কর্মকর্তা টু কিউআইএস, মোবাঃ 01711-152900, ইমেইল:
(বর্তমানে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (পিএন্ডডি), এলজিইডি-এর সাথে কর্মরত)
Add comment

কুষ্টিয়া সম্পর্কিত তথ্য

সর্বশেষ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

তথ্য সম্পর্কে খবর

আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন এবং আপডেট থাকুন
আমরা কুকিজ ব্যবহার করি
আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে কুকিজ ব্যবহার করি। তাদের মধ্যে কিছু সাইট পরিচালনার জন্য অপরিহার্য, অন্যরা আমাদের এই সাইট এবং ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা উন্নত করতে সাহায্য করে (কুকিজ ট্র্যাক করা)। আপনি কুকিজকে অনুমতি দিতে চান কিনা তা আপনি নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। দয়া করে মনে রাখবেন যে আপনি যদি সেগুলি প্রত্যাখ্যান করেন তবে আপনি সাইটের সমস্ত কার্যকারিতা ব্যবহার করতে পারবেন না।