বাংলা তথ্য ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে আমাদের এই প্রয়াস। ইতিহাস এবং ঐতিহ্যর তথ্য দিতে চাইলে ইমেইল kushtia.contact@gmail.com অথবা ফোন করুনঃ- ০১৯৭৮ ৩৩ ৪২ ৩৩

Select your language

বাউল মেলা ২০২৫ কুষ্টিয়া
বাউল মেলা ২০২৫ কুষ্টিয়া
  • Sub Title: 135th Departure Day Of Fakir Lalon Shah

ফকির লালন শাঁইজি (১৭৭৪–১৮৯০) ছিলেন বাঙালি আধ্যাত্মিক নেতা, দার্শনিক, মিস্টিক কবি ও সমাজ সংস্কারক। তিনি ধর্ম ও জাতিভিত্তিক বিভাজন প্রত্যাখ্যান করে মানবতার জ্ঞান ও প্রেমের গান রচনা করতেন। তাঁর মৃত্যু হয়েছিল ১৮৯০ সালের ১৭ অক্টোবর, যা বঙ্গাব্দে ১ কার্তিক ১২৯৭ হিসেবে পালিত হয়।

🎉 ১৩৫তম তিরোধান ২০২৫

  • সম্ভাব্য তারিখ: ১৭–১৯ অক্টোবর ২০২৫ (প্রতি বছরই ১লা কার্তিকে শুরু হয়)
  • স্থান: কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়া গ্রামে অবস্থিত লালন আখড়া
  • আয়োজক: লালন একাডেমি, জেলা প্রশাসন ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়

আখড়ার পরিবেশ:

  • তিন দিনব্যাপী মেলার মধ্য দিয়ে সঙ্গীত প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও সাধুসঙ্গ অনুষ্ঠিত হয়।
  • ভক্ত ও বাউল গান কারীরা রাতভর গান পরিবেশন করেন; বসে কথা, খানাপিনা ও আধ্যাত্মিক মিলন-সফর চলে।
  • প্রতি বছর লাখো দর্শনার্থী হাজির হন, তাঁরা গুরু–শিষ্য ভাব বিনিময় ও শিবিরে অংশগ্রহণ করেন।

🎶 লালনের দর্শন ও সাংস্কৃতিক ভূমিকা

  • লালনের গান ও ভাবনায় সর্বজনীন দার্শনিকতা, অসাম্প্রদায়িকতা, মানবতা ও আত্মানুসন্ধান প্রতিফলিত হয়।
  • তিনি জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও লিঙ্গের বিভাজন প্রত্যাখ্যান করে সকল মানুষের সমান মর্যাদা দাবি করতেন।
  • শিল্পী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও বিশ্বের অন্যান্য চিন্তাবিদের জীবনে তার প্রভাব স্পষ্টভাবে ধরা যায়।

🕍 লালনের আখড়া ও লালন স্মৃতি উৎসব

  • ১৯৬৩ সালে সেখানে আখড়া ভবন ও গবেষণা কেন্দ্ৰ গড়ার মাধ্যমে আকর্ষণীয় স্থান পরিণত হয়।
  • প্রতি বছরের ১লা কার্তিকে (বিশেষ করে অন্নপূর্ণা পূর্ণিমা ও তিরোধান দিবসে) তিন দিন ব্যাপী অনুষ্ঠান ও মেলা হয়।

📅 অনুষ্ঠান সূচি (প্রস্তাবিত)

তারিখসকালবিকেলসন্ধ্যা ও রাত
১৭ অক্টোবর বাল্যসেবা ও সাধুসঙ্গ আলোচনা সভা আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ও গান
১৮ অক্টোবর পালাবন্ধন ও বেলা সঙ্গীত কর্মশালা/আলোচনা রাতের গান ও আখড়া উৎসব
১৯ অক্টোবর পূর্ণসভা ও বাল্যসেবা সমাপনী আলোচনা সমাপ্তি ও মিলনমেলা

🔍 গুরুত্ব ও গ্রহণযোগ্যতা

  • লালনের মূল বাণী—“মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি”—আজও প্রাসঙ্গিক এবং ধর্মান্ধতা, জাতিবাদ ও ঘৃণাভিত্তিক ফ্যাসিবাদের প্রতিবাদী চেতনা তুলে ধরে।
  • সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, শিল্পকলা একাডেমি, জেলা প্রশাসন, বাউল সমাজ ও সাধারণ মানুষ মহত্পূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
  • প্রতিটি তিরোধান উৎসবে দেশ-বিদেশী হাজার হাজার আগত ভক্ত-অনুসারীরা ধর্মান্তর বা ঘরোয়া জীবনে গান, সাহিত্য ও মানুষিক মুক্তির মেলবন্ধন করে।

ফকির লালন শাঁইজীর ১৩৫তম তিরোধান দিবস শুধু স্মৃতির উৎসব নয়, মানুষের হৃদয়ে অসাম্প্রদায়িকতা ও মানবতার আলো জ্বালানোর এক চিরন্তন আন্দোলন। গান ও সন্ধ্যার আলোকে রাঙা এই মেলা মনকে নির্মোহ করে, একে অপরের সঙ্গে সম্প্রীতির বন্ধন শক্ত করে—যা আমাদের আজও প্রয়োজন। এই আয়োজন শুধু ঐতিহ্যের সংরক্ষণ নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য মূল্যবোধের পাঠ।

২০২৫ সালের উৎসবে লাখো মানুষের মিলন আশা করি, লালনের স্বপ্ন—“জাত, ধর্ম, বর্ণ এমন বাঁধনবিহীন এক মানবতা”—সুপ্রকাশ লাভ করবে।

Add comment

ইতিহাস এর নতুন প্রবন্ধ

সর্বশেষ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

তথ্য সম্পর্কে খবর

আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন এবং আপডেট থাকুন