বাংলা তথ্য ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে আমাদের এই প্রয়াস। ইতিহাস এবং ঐতিহ্যর তথ্য দিতে চাইলে ইমেইল kushtia.contact@gmail.com অথবা ফোন করুনঃ- ০১৯৭৮ ৩৩ ৪২ ৩৩

Select your language

রাজশাহী বিভাগের বিখ্যাত দর্শনীয় স্থানসমূহ
রাজশাহী বিভাগের বিখ্যাত দর্শনীয় স্থানসমূহ
  • Sub Title: প্রাচীন ইতিহাস ও প্রকৃতির রত্নভাণ্ডার

বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত রাজশাহী বিভাগ ইতিহাস, ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপূর্ব সমন্বয়। এই বিভাগের অধীনে রয়েছে ৮টি জেলা: রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বগুড়া, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ এবং পাবনা। প্রতিটি জেলাই পর্যটনপ্রেমীদের জন্য বহুমাত্রিক আকর্ষণ নিয়ে হাজির হয়।

রাজশাহী জেলার বাঘা মসজিদ, পুঠিয়া রাজবাড়ি ও মন্দির; নাটোরের ঐতিহাসিক উত্তরা গণভবন ও রাণী ভবানীর রাজবাড়ি; নওগাঁর সীতাকোট বিহার এবং কুসুম্বা মসজিদ; চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ ও প্রাচীন তাহিরপুর; বগুড়ার মহাস্থানগড় ও বিহার; জয়পুরহাটের পাহাড়পুর মহাবিহার, পাবনার হেমায়েতপুরের তাপসী আশ্রম এবং সিরাজগঞ্জের যমুনা সেতু ও হার্ডিঞ্জ ব্রিজ — সবই রাজশাহী বিভাগকে করে তুলেছে এক অনন্য পর্যটন অঞ্চল।

এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, নদ–নদী, বৌদ্ধ ও মুসলিম স্থাপত্য, সমৃদ্ধ লোকসংস্কৃতি এবং সুস্বাদু আম-লিচু রাজশাহী বিভাগকে বাংলাদেশে এক ভিন্ন উচ্চতায় তুলে ধরেছে।

১. পুঠিয়া মন্দির কমপ্লেক্স

রাজশাহী শহর থেকে প্রায় ২৩ কিমি উত্তরে অবস্থিত পুঠিয়া রাজবাড়ি ও তার চমৎকার মন্দিরগুলি পর্যটকদের নন্দনের ঠিকানা। এখানে স্বাধীন ও শৈব মন্দির, সরস্বতী, জগন্নাথ মন্দির রয়েছে, যেগুলো ভূতাত্ত্বিক ও স্থাপত্যশৈলীর অসাধারণ নমুনা।

২. পাহাড়পুর ভাসি বা সোমাপুর মহাবিহার

ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য ঘোষিত এই প্রাচীন বৌদ্ধ সাম্রাজ্যের ধ্বংসাবশেষ সারা দুনিয়ায় পরিচিত। অষ্টম শতাব্দীর বিশাল মহাবিহার ও স্থাপত্য-শৈলীর ম্যাজিক এখনও ধরে রেখেছে দেখার আকর্ষণ।

৩. মহাস্থানগড় (মহাস্থানগড়)

বগুড়া জেলার কাছে অবস্থিত পুণ্ড্র নগরীর প্রাচীন অবশেষ বা মহাস্থানগড়। এটি উত্তর ভারতের প্রথম নগর রাষ্ট্রগুলোরই একটি, যা পাল ও গুপ্ত যুগের গুরুত্ব বহন করে।

৪. বাঘা মসজিদ

১৬শ শতকের সুলতান আমলে নির্মিত এই টেরাকোটা মসজিদ তার সূক্ষ্ম খোদাইকৃত অলংকরণ ও স্থাপত্যশৈলীর জন্য প্রসিদ্ধ। পদ্মার তীরে অবস্থিত, যা রাজশাহীর স্থানীয় ঐতিহ্য তুলে ধরে।

৫. ভরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থিত বাংলাদেশ-এর প্রাচীনতম মিউজিয়াম। এখানে আপনি পুরাকীর্তি, মুদ্রা, শিলালিপি ও প্রত্নপ্রাসাদসহ রাজশাহীর ইতিহাস উন্মোচন করতে পারবেন।

৬. রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও শহীদ সৃতি সংগ্রহশালা

বাংলাদেশের অন্যতম বড় ও সুপরিকল্পিত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্মারক এখানে সংরক্ষিত।

৭. টিবাঁধ, পদ্মা তীর ও পার্ক প্রশাসন

“টি-বাঁধ” নামক পদ্মা নদীর সীমানা পাড়, যেখানে মনোরম সূর্যাস্ত এবং নদীর প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করা যায়। এর বাইরে “পদ্মা গার্ডেন”, জাফরুল্লা আম টব ইত্যাদি রয়েছে।

৮. সেন্ট্রাল পার্ক ও রাজশাহী চিড়িয়াখানা

রাজশাহী শহরের অন্যতম পরিবার-বান্ধব বিনোদন কেন্দ্র। এখানে শিশুদের জন্য খেলার জায়গা ও বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী রয়েছে।

৯. হজরত শাহ মখ্‌দুম (রহ.)’র সমাধি ও মাজার

১৭শ শতকে ইসলাম প্রচারকারী এই সুফি সাধকের মাজারে প্রতি বছর হাজারো সম্প্রদায়ের মানুষ আসে আশীর্বাদ গ্রহণে।

১০. রাজশাহী রৌপ্যশিল্প (সিল্ক) ও ফলবাগান

রাজশাহী বিভাগ “শিল্ক সিটি” হিসেবে সুপরিচিত। এখানকার হস্তচালিত রেশম শিল্প, আম ও লিচুর বাগান পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয়।

🔎 ভ্রমনের সময় ও টিপস

  • শীতকাল (নভেম্বর–ফেব্রুয়ারি): মনোরম আবহাওয়া, সেরা সময় সিট-এ দেখা ও খোলা স্থাপন দেখা।
  • গ্রীষ্ম (মার্চ–মে): ফল মৌসুমে আম-লিচু উপভোগের সেরা সময়।
  • র্ষা (জুন–অক্টোবর): পদ্মায় জলবৃদ্ধি, বোটিংয়ের জন্য সময় – তবে বন্যা ও বাতাস থাকতে পারে।

🧭 ঢাকাগামী বাস — প্রায় ৫–৬ ঘণ্টায় পৌঁছে যায়; রেল ও বিমান সড়কেও সহজ সংযোগ রয়েছে।

রাজশাহী বিভাগ ইতিহাস, সংস্কৃতি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পূর্ণ। প্রাচীন বৌদ্ধ ও হিন্দু নিদর্শন থেকে শুরু করে সুফি ঐতিহ্য, নদীতীরের দৃশ্যাবলী — সবই এক জায়গায় পাওয়া যায়। মনে রাখবেন, এই ভ্রমণ আপনাকে ইতিহাসের সঙ্গে স্বাদ ও পরিবেশের সাথে আবেগ সংযোগ করবে।

আপনার পরবর্তী ভ্রমণ পরিকল্পনায় রাজশাহী বিভাগ রাখুন, এবং এমন এক ভ্রমণ উপভোগ করুন যা মোহনীয় ও স্মরণীয় হয়ে থাকবে! 😊

Add comment

সংস্কৃতি এর নতুন প্রবন্ধ

সিলেট বিভাগের বিখ্যাত দর্শনীয় স্থানসমূহ
সিলেট বিভাগের বিখ্যাত দর্শনীয় স্থানসমূহ

সিলেট বিভাগের বিখ্যাত দর্শনীয় স্থানসমূহ

  • Sub Title: প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ একটি এলাকা

সর্বশেষ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

তথ্য সম্পর্কে খবর

আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন এবং আপডেট থাকুন
আমরা কুকিজ ব্যবহার করি
আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে কুকিজ ব্যবহার করি। তাদের মধ্যে কিছু সাইট পরিচালনার জন্য অপরিহার্য, অন্যরা আমাদের এই সাইট এবং ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা উন্নত করতে সাহায্য করে (কুকিজ ট্র্যাক করা)। আপনি কুকিজকে অনুমতি দিতে চান কিনা তা আপনি নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। দয়া করে মনে রাখবেন যে আপনি যদি সেগুলি প্রত্যাখ্যান করেন তবে আপনি সাইটের সমস্ত কার্যকারিতা ব্যবহার করতে পারবেন না।