আপনাকে কুষ্টিয়াশহর.কম এর পক্ষ হতে প্রবিত্র রমজান মোবারক 🌙। বাংলা তথ্য ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে আমাদের এই প্রয়াস। ইতিহাস এবং ঐতিহ্যর তথ্য দিতে চাইলে ক্লিক করুন অথবা ফোন করুনঃ- ০১৯৭৮ ৩৩ ৪২ ৩৩

Select your language

১৯৪৪ সাল থেকে কলকাতার Morning News পত্রিকার বার্তা বিভাগে কাজ করেন
১৯৪৪ সাল থেকে কলকাতার Morning News পত্রিকার বার্তা বিভাগে কাজ করেন

সৈয়দ আলতাফ হোসেন (জন্মঃ ১৬ মার্চ ১৯২৩ইং, মৃত্যুঃ ১২ নভেম্বর ১৯৯২ইং) বিপ্লবী সাংবাদিক এবং রাজনীতিবিদ। তৎকালীন ব্রিটিশ রাজ্যর, ওয়েস্ট বেঙ্গল এর কুষ্টিয়া জেলার বিস্টুদিয়া গ্রামে জন্ম। পিতা সৈয়দ ইয়াদ আলী এবং মাতা জরিনা খাতুন। আলতাফ হোসেন কুষ্টিয়ার হরিনারায়ণপুর স্কুল থেকে ১৯৩৯ সালে ম্যাট্রিকুলেশন, কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে ১৯৪১ সালে আই.এ এবং ১৯৪৪ সালে বি.এ পাস করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৪৬ সালে বি.এল এবং ১৯৪৭ সালে ইতিহাসে এম.এ ডিগ্রি লাভ করেন।

ছাত্রজীবন থেকেই সৈয়দ আলতাফ হোসেন সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি ১৯৪৪ সাল থেকে কলকাতার Morning News পত্রিকার বার্তা বিভাগে কাজ করেন। ভারত বিভাগের পর তিনি ঢাকায় চলে আসেন এবং ১৯৪৯ সালে Pakistan Observer পত্রিকার বার্তা বিভাগে যোগ দেন। এ ছাড়া তিনি কিছুকাল দৈনিক ইত্তেহাদে কাজ করেন। তিনি ঢাকার Morning News পত্রিকায় ১৯৫০-১৯৫৩ সালে সম্পাদকীয় বিভাগে কর্মরত ছিলেন। ১৯৫৬ সালে তাঁর সম্পাদনায় ঢাকা থেকে প্রকাশিত হয় New Nation পত্রিকা।

আলতাফ হোসেন ছাত্রজীবনেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি কলকাতার ছাত্র ফেডারেশনে যোগ দেন এবং ইসলামিয়া কলেজ শাখার সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৪০ সালে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে হলওয়েল মনুমেন্ট অপসারণের আন্দোলনে তিনি অংশগ্রহণ করেন। ১৯৫৩ সালে তিনি আওয়ামী মুসলিম লীগে যোগ দেন এবং ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে পূর্ববঙ্গ আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫৪ সালের ৩০ মে সরকার ৯২-ক ধারা জারি করে প্রদেশে গভর্নরের শাসন চালু করলে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। ১৯৫৫ সালে তিনি গ্রেফতার হন এবং কয়েকমাস কারাভোগ করেন। পুলিশ ধর্মঘটে তাঁর সম্পৃক্ততার অভিযোগে ওই বছর তাঁর বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি হলে তিনি আত্মগোপনে থাকেন।

আলতাফ হোসেন ১৯৫৭ সালে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে গঠিত ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫৮ সালে দেশে সামরিক শাসন জারি হলে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। এ সময় তিনি প্রায় ২ বছর আত্মগোপনে থাকেন। ১৯৬৫ সালে সৈয়দ আলতাফ হোসেন ন্যাপের পূর্ব পাকিস্তান শাখার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬৬ সালে তিনি গ্রেফতার হন এবং জেলে থাকা অবস্থায়ই তিনি চীন ও সোভিয়েত ইউনিয়নের আদর্শগত দ্বন্দ্বে বিভক্ত ন্যাপের মস্কোপন্থী অংশের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন (১৯৬৭)। ১৯৬৮ সালে হাইকোর্টের এক রায়ে মুক্তিলাভের কিছুদিন পর একই বছর পুনরায় তিনি গ্রেফতার হন। পরে জামিনে মুক্ত হয়ে আইয়ুব বিরোধী গণআন্দোলনে অংশ নেন। ওই বছর নভেম্বর মাসে পুনরায় তিনি গ্রেফতার হন। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে আইয়ুব খানের পতনের পর তিনি মুক্তি লাভ করেন। সৈয়দ আলতাফ হোসেন ১৯৭০ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ন্যাপ কর্মীদের ভারতে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ কাজে সহায়তা এবং ন্যাপের নেতৃত্বাধীন ৬০টি যুব ক্যাম্প পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। সৈয়দ আলতাফ হোসেন ১৯৭৫ সালে গঠিত বাংলাদেশ কৃষক-শ্রমিক আওয়ামী লীগের (বাকশাল) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মন্ত্রিসভায় রেলওয়ে প্রতিমন্ত্রী এবং খন্দকার মোশতাক আহমদের মন্ত্রিসভায় সড়ক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৮ সালে গঠিত জাতীয় একতা পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন।

১৯৮৩ সালে সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনের কারণে তিনি গ্রেফতার হন। ১৯৮৫ সালে পুনরায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হলে আত্মগোপন করেন। ১৯৮৬ সালে তিনি জাতীয় একতা পার্টি এবং ন্যাপের দুটি অংশের সমন্বয়ে গঠিত ঐক্য ন্যাপের আহবায়ক নির্বাচিত হন।

আলতাফ হোসেন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১৫ দলীয় জোট গঠন এবং জোটের ৫ দফা কর্মসূচি প্রণয়নে ভূমিকা রাখেন। তিনি ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে জোটের প্রার্থী হিসেবে কুষ্টিয়া থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আলতাফ হোসেন ১৯৯০ সালে ঐক্য ন্যাপ এবং প্রজাতন্ত্রী পার্টির সমন্বয়ে গঠিত গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি নির্বাচিত হন এবং আমৃত্যু এ দায়িত্ব পালন করেন।

সৈয়দ আলতাফ হোসেন আইন পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের তালিকাভুক্ত আইনজীবী। তিনি দীর্ঘকাল ঢাকা ল’ কলেজের ভাইস-প্রিন্সিপাল ছিলেন। ১৯৯২ সালের ১২ নভেম্বর ঢাকায় তাঁর মৃত্যু হয়।

Add comment

সংস্কৃতি এর নতুন প্রবন্ধ

সর্বশেষ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

তথ্য সম্পর্কে খবর

আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন এবং আপডেট থাকুন
We use cookies

We use cookies on our website. Some of them are essential for the operation of the site, while others help us to improve this site and the user experience (tracking cookies). You can decide for yourself whether you want to allow cookies or not. Please note that if you reject them, you may not be able to use all the functionalities of the site.