আপনাকে কুষ্টিয়াশহর.কম এর পক্ষ হতে ঈদ মোবারক 🌙। বাংলা তথ্য ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে আমাদের এই প্রয়াস। ইতিহাস এবং ঐতিহ্যর তথ্য দিতে চাইলে ক্লিক করুন অথবা ফোন করুনঃ- ০১৯৭৮ ৩৩ ৪২ ৩৩

Select your language

বেল খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা জেনে নিন আর থাকুন ফিট
বেল খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা জেনে নিন আর থাকুন ফিট

বেলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

বেল কিন্তু সেই প্রাচীন সময় থেকে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে উপকারী ফল হিসেবে পরিচিতি পেয়ে এসেছে। এর মধ্যে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান তো আছেই, তাছাড়াও আরও অনেক পুষ্টিগুণ আছে। যেমন ধরুন ১০০ গ্রাম বেলে আপনি পাবেন ১.৮ গ্রাম প্রোটিন, ৩১.৮ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ০.৩ গ্রাম ফ্যাট, ৫৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন এ, ৬০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ৮৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৬০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম। তার মানে বুঝতেই পারছেন কত দিক থেকে বেল পুষ্টিকর আপনার স্বাস্থ্যের জন্য।

কী কী উপকার আছে

চরক সংহিতায় কিন্তু বেলের উল্লেখ আছে। বেল গাছের সবকটি অংশকেই বলা হয়েছে ভেষজ গুণসম্পন্ন। তাই আজ থেকেই বেল খাওয়া শুরু করুন।

১. কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়

কোষ্ঠকাঠিন্য হলে করণীয় – আমরা সেই ছোট থেকে শুনে আসছি, পেট পরিষ্কার করার জন্য বেল খেতে হয়। এটি কিন্তু বৈজ্ঞানিক ভাবেও সত্য। বেল সুন্দর ভাবে মল পরিষ্কার হতে সাহায্য করে। নিয়মিত রোজ টানা ৩ মাস যদি আপনি বেলের শরবৎ খেতে পারেন তাহলে আপনার মল আর কঠিন থাকবে না। কোষ্ঠকাঠিন্য আর হবে না। পাকা বেলের শাঁস বের করে চিনি দিয়ে মিশিয়ে আর জল বা দুধে ঘেঁটে শরবৎ করে খান এটাই হলো খুব তাড়াতাড়ি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায়।

২. ডায়েরিয়া কমায়

ডায়রিয়া হলে কি কি খাবার খাওয়া উচিত – কাঁচা বেল ডায়েরিয়ার জন্য অব্যর্থ ওষুধ। কাঁচা বেল খাওয়ার নিয়ম হল যদি অনেক দিন ধরে আপনি এই সমস্যায় ভোগেন তাহলে বেল খান। কাঁচা বেল স্লাইস করে কেটে রোদে শুকিয়ে নিন। তারপর তা গুঁড়ো করে নিন আর এই গুঁড়ো ১ চামচ নিয়ে ব্রাউন সুগার আর গরম জলে মিশিয়ে খান। দিনে দু বার খেতে হবে এই জল। আপনাকে ফল পেতে এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। আমরা অনেকেই ভাবি যে ডায়রিয়া হলে কি ফল খাওয়া যাবে ? তার মধ্যে অত্যন্ত ভালো এই বেল।

৩. পেপটিক আলসারের ওষুধ – আলসার নিরাময়

আলসার থেকে মুক্তির উপায় জানতে হলে আমাদের অএঙ্ক কিছুই মানতে হবে। আপনার আলসার যদি দীর্ঘ দিনের হয় তাহলে তো ডাক্তার দেখাতেই হবে, ওষুধ খেতেই হবে। আলসার রোগীর খাবার বলতে আমাদের অনেক ভেবে চিনতে খাবার খেতে হয়। অনেক কিছু বারোনোও আছে কিন্তু তার সঙ্গে বেল খাওয়াও কিন্তু খুব দরকার। পাকা বেলের শাঁসে সেই ফাইবার আছে যা আলসার উপশমে সাহায্য করে। সপ্তাহে তিন দিন বেলের শরবৎ করে খান আলসার কমাতে। এছাড়া বেলের পাতা সারা রাত জলে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সেই জল খেলেও কিন্তু অনেক কমে যায় আলসার।

৪. ডায়াবেটিস কমায়

ডায়াবেটিস রোগীর খাবার এর মধ্যে পাকা বেল হল অনেক উপকারী। পাকা বেলে আছে মেথানল নামের একটি উপাদান যা ব্লাড সুগার কমাতে অনবদ্য কাজ দেয়। সাম্প্রতিক গবেষণায় এটি ধরা পড়েছে। তবে ভালো ফল পেতে পাকা বেল শরবৎ করে নয়, এমনিই খেতে হবে।

৫. যক্ষ্মা কমায়

শুনে একদমই চমকে উঠবেন না। পাকা বেলে আছে অ্যান্টি মাইক্রোবায়াল উপাদান, যা যক্ষ্মা কমাতে সাহায্য করে। তবে ভালো ফল পেতে আপনাকে ব্রাউন সুগারের সঙ্গে বা মধু দিয়ে বেলের শরবৎ করে রাতে খেতে হবে শুতে যাওয়ার আগে। এটি টানা চল্লিশ দিন খান। উপকার পেতে আপনি বাধ্য।

৬. আর্থ্রারাইটিস উপশম করে

এটি একটি এমন সমস্যা যা আজকাল শুধু বয়স্কদের নয়, অনেক কম বয়সের মানুষদেরও হচ্ছে। গাঁটে গাঁটে ব্যথা, চলতে সমস্যা এই সবই এর লক্ষণ। কিন্তু বেলে থাকা অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান এই ব্যথার হাত থেকে আমাদের মুক্তি দিতে পারে। নিয়ম করে তাই বেল খান।

৭. স্কার্ভি কমায়

স্কার্ভি হল দাঁতের একটি সমস্যা যেটি মূলত ভিটামিন সি’র অভাবে হয়। দাঁতের ক্ষয় হয় মূলত এই রোগ হলে। বেল এই রোগের প্রকোপ কমায়। আমরা দেখেইছি যে বেল হল ভিটামিন সি’র একটি অনবদ্য উৎস। তাই আমরা আমাদের দৈনন্দিন ভিটামিন সি’র চাহিদা বেল থেকে পূরণ করতে পারি।

৮. ক্যানসার থেকেও দূরে রাখে

ক্যানসার আজকের দিনের এক মহামারী বলা যায়। আমরা সবাই চাই এই রোগটি থেকে দূরে থাকতে। বেল কিন্তু আমাদের এই রোগ থেকে দূরে রাখে। এতে আছে অ্যান্টি প্রলেফিরেটিভ ও অ্যান্টি মুটাজেন উপাদান। এই উপাদান টিউমার হতে দেয় না সহজে। আর যেহেতু এই ফলে হাই অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান আছে তাই ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।

৯. আভ্যন্তরীণ সার্বিক স্বাস্থ্য ধরে রাখতে

বেলে আছে ফেনোলিক কম্পাউন্ড যা উচ্চ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এই গাছের সব অংশই অ্যান্টি অক্সিডেন্টে ভরপুর। আর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আমাদের কোষ তৈরিতে সাহায্য করে। ড্যামেজ কোষ থেকে ফ্রি র্যাটডিকেল হওয়া কমায়। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বার্ধক্য কমায় আর ত্বকের যৌবন ধরে রাখে।

১০. ম্যালেরিয়া কমায় – কাঁচা বেলের উপকারিতা

এটাও নিশ্চয়ই আগে শোনেননি ? বেলের কিন্তু এই গুণটিও আছে। ম্যালেরিয়া হলে কাঁচা বেল নিয়ে গুঁড়ো করে নিন। এবার ১ চামচ এই বেল গুঁড়ো নিয়ে তার সঙ্গে তুলসীর রস নিন। সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেয়ে নিন দিনে দু বার। এটি কিন্তু অসাধারণ কাজ দেয়।

১১. রক্ত শুদ্ধ করে

আমাদের শরীরের প্রধান উপাদানই তো রক্ত । রক্তের মাধ্যমেই পুষ্টিগুণ সব অংশে পরিবাহিত হয়। তাই রক্তের শুদ্ধ থাকাটা খুব দরকার। বেল এই রক্ত শুদ্ধ করতে খুব ভালো কাজ দেয়। খানিকটা পাকা বেলের রসের সঙ্গে চিনি মিশিয়ে খেলে এটি রক্ত শুদ্ধ করে। ট্যান দূর করে। শুধু রক্ত নয়, কিডনি ও লিভারের কাজও ঠিক করে।

১২. এনার্জি বাড়ায় – এনার্জি খাবার

আজকের দিনে আমাদের অনেক কাজ করতে হয়। বসে থাকার সময় নেই আমাদের। আর কাজ করার জন্য চাই এনার্জি, তাই এনার্জি বাড়াতেই হবে। তাই আমাদের জানতে হবে কি কি খাবারে এনার্জি বাড়ায় বা কি কি খাবার খেলে শক্তি বাড়ে। বেল এই এনার্জি বাড়াতে অনবদ্য। ১০০ গ্রাম বেল ১৪০ ক্যালোরি এনার্জি দেয়। বেল মেটাবলিক স্পিড বাড়ায়। আর এতে হাই প্রোটিন আছে বলে পেশি তাড়াতাড়ি সজাগ হয়। তাই আমরা অনেকটা সময় জুড়ে এনার্জেটিক থাকতে পারি। অনেক কাজ করতে পারি।

১৩. লিভারের যত্ন

লিভার সমস্যার প্রতিকার এর ব্যাপারে বলতে গেলে একমাত্র সবার আগে যেটা ,মনে পরে সেটা হল বেল। বেল বিটা ক্যারোটিনের সমৃদ্ধ উৎস। আর বিটা ক্যারোটিন হল লিভার ভালো রাখার অন্যতম মূল চাবিকাঠি। বেলে আছে থিয়ামিন আর রাইবোফ্লেভিন। এই দুই উপাদানই লিভারের শক্তি বাড়ায় খুব ভালো ভাবে। তাই লিভার ভালো রাখতে রোজ বেল খাওয়ার অভ্যেস করুন।

১৪. ব্লাড প্রেসার কমায়

হাই প্রেসারের খাবার যদি আপনি বেলের ভক্ত নাও হন, তাও বেল খান। কারণ বেল আপনার ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখবে। সাধারণ যেমন বেলের শরবৎ খান সেভাবে খেলেই হবে। মিষ্টি এই শরবৎ কিন্তু আপনার এই চাপ থেকে আপনাকে অনেক দূরে রাখবে।

১৫. আমাশয় কমায়

আমাশয় হলে কিন্তু আমাদের যন্ত্রণার একশেষ। নাভির কাছে চিনচিনে ব্যথা, টক বমি সব মিলে খুব বাজে ব্যাপার। কিন্তু বেলের কাছে এটি কমাবারও ম্যাজিক আছে। কচি বেল টুকরো করে কেটে জলে ভিজিয়ে রাখুন সারা রাত। সেই জল পরের দিন ছেঁকে নিয়ে খান। দেখবেন এতে খুব ভালো ফল পাবেন।

Add comment

সর্বশেষ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

তথ্য সম্পর্কে খবর

আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন এবং আপডেট থাকুন
We use cookies

We use cookies on our website. Some of them are essential for the operation of the site, while others help us to improve this site and the user experience (tracking cookies). You can decide for yourself whether you want to allow cookies or not. Please note that if you reject them, you may not be able to use all the functionalities of the site.