আপনাকে কুষ্টিয়াশহর.কম এর পক্ষ হতে ঈদ মোবারক 🌙। বাংলা তথ্য ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে আমাদের এই প্রয়াস। ইতিহাস এবং ঐতিহ্যর তথ্য দিতে চাইলে ক্লিক করুন অথবা ফোন করুনঃ- ০১৯৭৮ ৩৩ ৪২ ৩৩

Select your language

স্বাধীন বাংলার প্রথম পতাকার রুপকার - কাজী আরেফ আহমেদ
স্বাধীন বাংলার প্রথম পতাকার রুপকার - কাজী আরেফ আহমেদ

বীর বাংগালী অস্ত্র ধর - বাংলাদেশ স্বাধীন কর।
তোমার আমার ঠিকানা - পদ্মা, মেঘনা,যমুনা।
ক্ষমতা না জনতা - জনতা জনতা।
তুমি কে আমি কে - বাঙালী বাঙালী।

আইয়ুবের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনই কাজী আরেফ আহমেদকে রাজনৈতিক কর্মী করে গড়ে তোলে। ১৯৬২ এর নভেম্বর এ সিরাজুল আলম খান, আব্দুর রাজ্জাক ও কাজী আরেফ আহমেদ বাংলাদেশে স্বাধীন করার সিদ্ধান্তে এক মতে পৌছান। এটাই ৬২ এর নিউক্লিয়াস নামে পরিচিত। যার নেতৃত্তে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ নামে যুদ্ধের লক্ষ্যে একটি গোপন সংগঠন গড়ে উঠেছিলো। সারাদেশব্যপী এ সংগঠনের তৎপরতা ছিলো। এইসব শ্লোগানের সত্যিকার বহি:প্রকাশ মৃতুর দিন পর্যন্ত তার মধ্যে লক্ষ্য করা গেছে। বর্তমানে শাহবাগে বিভিন্ন আন্দোলনে এই শ্লোগান শোনা যায়।

জন্ম : ১৯৪২ সালের ৮ই এপ্রিল কুষ্টিয়ার সম্ভ্রান্ত কাজী পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা কাজী আব্দুল কুদ্দুস সাহেব একজন সরকারি চাকুরী জীবী ছিলেন। তিনি একজন ধর্মপ্রান মানুষ ছিলেন। পিতার মতই তিনি একজন সৎ ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন ছিলেন। তার মাতা খন্দকার খোদেজা খাতুন একজন ধর্মপ্রাণ বিদুষী নারী ছিলেন। আরেফ আহমেদরা দশ ভাই-বোন।

শিক্ষাজীবন : কাজী আরেফ আহমেদ ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে মাধ্যমিকশিক্ষা সমাপ্ত করে ও স্নাতক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন, এরপর ঢাকা বিশবিদ্যালয়ে ভুগোল বিভাগে ভর্তি হন। আন্দোলন সংগ্রাম ও আইয়ুবি নির্যাতনে মাস্টার্স ডিগ্রি অসমাপ্ত থাকে।

ছাত্র রাজনীতি : ১৯৬৩ থেকে ১৯৭০ সালে পর্যন্ত তিনি তৎকালীন পুর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটিতে ছিলেন।এই সময়ে দীর্ঘদিন ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। এ সময়ে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে এবং আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনকে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্তে সামরিক শাসনের কবর রচনার কাজে তুখোড় ভুমিকা রেখেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৬ দফা কর্মসূচি ঘোষিত হলে, ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি হিসেবে কাজী আরেফ আহমেদ প্রথম সমর্থন জানিয়ে বিবৃতি দেন। এই কর্মসূচীকে সারাদেশে রাজনৈতিক বুদ্ধিজীবী ও গন মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে বিশেষ দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৯ এর গন অভ্যুত্থান এ দেশের মানুষের জীবনের একটি টার্নিং পয়েন্ট। সকল সংগ্রামী মানুষ তখন এ খাতে প্রবাহিত হচ্ছে। পিছনে তাকাবার কোন অবকাশ নেই। এখানে পৌছে ওই অবিস্মরণীয় সময় একজন ছাত্রনেতা হিসেবে, একজন যুবক হিসেবে, একজন লড়াকু মানুষ হিসেবে, একজন নির্যাতিত ছাত্র হিসেবে, সর্বোপরি একজন যোদ্ধা হিসেবে অনন্য ভুমিকা রেখেছিলেন। সম-সাময়িকদের চোখে সেসব উজ্জল হয়ে আছে। সে আন্দোলনের নেতৃত্তে থাকা সকল ছাত্রনেতাদের সাথে তিনি বিচক্ষণতা, নিরলশ শ্রম, ক্লান্তিহীন চেষ্টায় বাঙালী জাতীয়তাবাদের আবেগে মুক্তিযুদ্ধকে অনিবার্য করে তোলে। পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে আমাদের মরনপন যুদ্ধের প্রস্তুতি চলতে থাকে। বাংলাদেশের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতী হিসেবে ১৯৭০ সালে গঠিত 'জয় বাংলা বাহিনীর '' অন্যতম সংগঠক। কাজী আরেফ আহমেদ সাধীনতা সার্বভৌমত্তের প্রতিক জাতীয় পতাকার অন্যতম রুপকার।দীর্ঘদিন ধরে লালিত সাধীন বাংলাদেশের সপ্নসাধ ১৯৭১ সালের সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়, তার সুচনা লগ্নে কাজী আরেফ আহমেদ বাংলাদেশ লিবারেশন ফ্রন্ট এর অন্যতম নেতার ভুমিকা পালন করেন। এই বাহিনীর নেতা হিসেবে তিনি মুক্তিযুদ্ধে পশ্চিম রনাঙ্গনের ( বৃহত্তর পাবনা, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, খুলনা ও বরিশাল ) নেতৃত্ব দেন।

তিনি জনগনের অর্থনৈতিক মুক্তি ও সৈরাচারী শোষনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা উত্তরকালে গঠিত দেশের প্রথম বিরোধী দল "জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল" জাসদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা নেতা। আশির দশক থেকে নব্বুইয়ের মাঝামাঝি পর্যন্ত জাসদের সভাপতি ছিলেন। তিনি সাধীনতা উত্তরকালে গনতান্ত্রিক সংগ্রামের বলিষ্ঠ মুখপাত্র দৈনিক গনকন্ঠের ব্যবস্থাপনা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি কৃষক সমাজের মুক্তির লক্ষ্যে জাতীয় কৃষকলীগের নেতৃত্তে থেকে কৃষক আন্দোলন গড়ে তোলেন। ভুমিহীন কৃষকদের সংগঠিত করার কাজে নিরলস পরিশ্রম করেছেন।

কাজী আরেফ আহমেদ সৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের একজন সফল ও দু:সাহসী সংগঠক। তিনি অবৈধ ক্ষমতা দখলদারদের বিরুদ্ধে ক্রমাগত সংগ্রামে গ্রেফতার, হুলিয়া ও নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন। ১৯৮৭ - ৮৮ সাল পর্যন্ত তিনি কারা নির্যাতন ভোগ করেন। আপোষহীন সংগ্রামী নেতা এই সামরিক আইন ও শাসনের চির অবসানের লক্ষ্যে ৯০ এর গন অভ্যুত্থানের জঙ্গী নেতৃত্ব দেন। ১৯৯২ সালের ২৬ শে মার্চ দেশবাসী এক বিরল সাধীনতা উদযাপন করেছিলেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গন আদালত অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। সেখানে জামায়াতে ইসলামের আমীর ও যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের ফাসীর রায় হয়েছিলো এবং অন্যান্য যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করে রায় ঘোষনা করা হয়েছিলো। সাথে সাথে উল্লেখ করা হয়েছিলো, যে কোন নির্বাচিত গনতান্ত্রিক সরকার এ রায় কার্যকর করবে।

শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্তে এ আন্দোলনের অন্যতম রুপকার ও সংগঠক ছিলেন কাজী আরেফ আহমেদ।

Kazi Aref Ahmed Death News

 

জাতীয় বীর মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শহীদ কাজী আরেফ আহমেদ

 

Add comment

সর্বশেষ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

তথ্য সম্পর্কে খবর

আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন এবং আপডেট থাকুন
আমরা কুকিজ ব্যবহার করি
আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে কুকিজ ব্যবহার করি। তাদের মধ্যে কিছু সাইট পরিচালনার জন্য অপরিহার্য, অন্যরা আমাদের এই সাইট এবং ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা উন্নত করতে সাহায্য করে (কুকিজ ট্র্যাক করা)। আপনি কুকিজকে অনুমতি দিতে চান কিনা তা আপনি নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। দয়া করে মনে রাখবেন যে আপনি যদি সেগুলি প্রত্যাখ্যান করেন তবে আপনি সাইটের সমস্ত কার্যকারিতা ব্যবহার করতে পারবেন না।