শফিকুল ইসলামের নাটক “সাঁইজির বাড়ী যাব” পাঁচটি অংশ ও ১৫টি চরিত্রের মোট ৫৬ পৃষ্ঠার নাটকের বই যা সম্পাদনা করেছেন কুষ্টিয়ার ঔপন্যাসিক, প্রবন্ধকার, গীতিকার নাজির উদ্দিন আহমেদ। প্রকাশক – লেখক নিজেই শফিকুল ইসলাম, জয়নাবাদ মন্ডলপাড়া ( পুরাতন পাকার মাথা ), কুমারখালী, কুষ্টিয়া।

রওশন আলি এই যুদ্ধে ও আগামী পরিকল্পনা নিয়ে নিজ দলের মধ্যে আলোচনা শুরু করেন। তিনি সবাইকে নিরাপদ স্থানে সরে যাবার পরামর্শ দেন, কিন্তু তিনি শহরেই থেকে যান। ১৫ দিন শত্রুমুক্ত থাকার পর ১৪ এপ্রিল পাক সেনারা ধবংসযজ্ঞ, হত্যাকান্ড চালাতে চালাতে শহর পুনঃদখল করে। এরই মধ্যে রওশন আলি সীমান্ত পাড়ি দিয়ে পশ্চিম বাংলায় চলে যান। সেখানে তার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক বন্ধুদের সাথে অনেক আলাপ আলোচনা হয়। তিনি নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে এসে বাংলাদেশ থেকে আসা যুবকদের একত্রিত করে মুক্তিযুদ্ধে যাবার জন্যে সশস্ত্র প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করেন।

১৯৪৮ সালে রওশন আলি আত্মগোপন করতে বাধ্য হন। তখন থেকে তিনি ঢাকায় অবস্থান করে দলের কাজ করতে থাকেন। এসময় বাম হটকারী লাইন গ্রহন করার কারনে পার্টিতে মতভেদ দেখা দেয়। তখন ৪৯ সালে পার্টির সিদ্ধান্তক্রমে কমরেড শেখ রওশন আলিকে সম্পাদক করে তিন সদস্যের প্রাদেশিক কমিটি গঠিত হয়। তার সাথে ছিলেন আলতাফ আলী ও আব্দুল বারী। পরে রওশন আলি গ্রেফতার হলে দলের দায়িত্ব পান আলতাফ আলী।

শেখ রওশন আলির ব্যক্তি জীবনের চাইতে তার রাজনৈতিক জীবনটাই মূলত মূখ্য। একজন রাজনীতিক কোন পর্যায়ে গিয়ে পৌছালে তার ব্যক্তিজীবন ম্লান হয়ে যায় রাজনৈতিক জীবনের কাছে তা তাকে পর্যালোচনা করলেই বোঝা যায়। তার নিজের জীবনের জন্য কোন অংশই ছিলো না, তার সবটুকুই দেশ, জাতি এবং নির্যাতিত, নিষ্পোষিত, নিপীড়িত, শোষিত জনগোষ্ঠির জন্য নিবেদিত।

কমরেড রওশন আলি পৃথিবীতে কিছু কিছু মানুষের জন্ম হয় যারা নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের চাইতে সাধারন খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের মঙ্গলের জন্য জীবন উৎসর্গ করে থাকেন। জদিও জগৎ সংসারে এসব মহৎ ব্যক্তিদের সংখ্যা খুবই নগন্য, এসব ক্ষনজন্মা মানুষের আবির্ভাব আমদের সমাজে খুবি দুর্লভ।

আলহাজ্ব কেএম আব্দুল খালেক চন্টু বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল [বিএনপি] মনোনীত প্রার্থী হিসাবে ১৯৯১ এর জাতীয় সংসদ, কুষ্টিয়া ৩ আসনে নির্বাচিত সংসদ সদস্য।

কবি, সাহিত্যিক, প্রবন্ধকার, গবেষক, শিক্ষাবিদ ডঃ আবুল আহসান চৌধুরী ১৯৫৩ সালের ১৩ জানুয়ারী কুষ্টিয়ার মজমপুরে নিজ পিত্রালয়ে জন্মগ্রহন করেন। পিতা ফজলুল বারী চৌধুরী, মাতা সালেহা খাতুন।

এ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান ১৯৪৩ সালে কুষ্টিয়া সদরের জিয়ারখী ইউনিয়নের শৈলগাড়ী গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০০৫ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তার পিতার নাম মেহেরুল্লাহ শেখ এবং মাতার নাম আমেনা খাতুন। তারা তিন ভাই দুই বোন।

পরাধীন ব্রিটিশ শৃংখলে জর্জরিত ভারতীয় জাতিস্বত্বার অন্য দশটা গ্রামের মতই বাংলার স্মৃতিবিজড়িত হাটশ হরিপুর গ্রাম। পা বাড়ালেই শিলাইদহের কুঠিবাড়ী। তারই এক পাড়ে ফকির লালন শাহ্‌, তার পাশে মীর মোশাররফ, কাঙ্গাল হরিনাথ, অক্ষয় কুমার মৈত্রেয়’র স্মৃতিবিজড়িত কুমারখালী। আর একপাড়ে শ্রী শ্রী অনুকুল ঠাকুর। একদিকে হাতছানি প্রমত্ত পদ্মার, তারি কুল ঘেষে গড়াইয়ের মাঝে হরিপুর। ১৯১৮ সালে এই গ্রামে জন্মগ্রহন করেন জাহের আলী মিয়া।

মহম্মদ আলী রেজা ১৯৩০ সালের ৭ ই ডিসেম্বর কুষ্টিয়া জেলার সুলতানপুর গ্রামে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহন করেন এবং ১৯৮৮ সালের ১২ ই মার্চ তিনি মৃত্যুবরন করেন। তার পিতা মরহুম জহুর আলী আহাম্মদ, গ্রাম লাহিনী, জেলা কুষ্টিয়া।

ন্যায় নিষ্ঠা, সততা, একাগ্রতা, ধৈর্য সঞ্চয়ী মনোভাব যে একটি মানুষকে শুন্য থেকে অগাধ সম্পদের মালিক করতে পারে যশ প্রতিপত্তি সমাজে সম্মানীয় ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারে তার জ্বলন্ত উদাহরন সর্বময় শ্রদ্ধেয় জনাব নকীব উদ্দীন আহমেদ। তিনি একজন জীবন্ত আইনের লাইব্রেরি হিসেবে খ্যাত। অসীম স্মরন শক্তি তাকে সাফল্যের উচ্চ শিখরে নিয়ে গিয়েছে।

লালন শাঁই এর মাজার, শিলাইদহ কুঠিবাড়ী, লালন শাহ সেতু, রেইন উইক বাধঁ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সাহিত্যিক মীর মোশাররফ হোসেনের বসতভিটা সহ আরো অনেক দর্শনীয় স্থান আছে আমাদের এই প্রানের কুষ্টিয়া জেলাতে। নাম জানা না জানা কত কবি, সাহিত্যিক, গায়ক, বাউল, সাধক, মুক্তিযোদ্ধা এর জন্মভুমি এই কুষ্টিয়া জেলা। আরো আছে খুলনা বিভাগের এর ভেতরে নামকরা কত বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান। ঠিক তেমনি কুষ্টিয়া শহর হতে মাত্র ৮ কিঃ মিঃ দূরে জগতি নামক স্থানে দাঁড়িয়ে রয়েছে আরো একটি দর্শনীয় স্থান ।

খন্দকার সামসুল আলম দুদু ১৯৪২ সালের ১৭ই আগষ্ট, কুষ্টিয়া জেলার সদর থানার হরিনারায়নপুর ইউনিয়নের আব্দালপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহন করেন। বাবা – মৃত খন্দকার কে আহমেদ, মাতা – মৃত ছারা খাতুন, ৫ ভাই ৩ বোন। ভাই বোনদের মধ্যে তিনি ৪র্থ । ভাইদের মধ্যে তৃতীয়।

কুষ্টিয়া জেলা ১৮ ও ১৯ শতকে সাহিত্যিক মীর মোশাররফ হোসেন, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাউল সম্রাট লালন ফকির ও বিচারপতি রাধা বিনোধ পালের জন্য ইতিহাসব্যাপী প্রখ্যাতি অর্জন করেছিল। এই অর্জন আরো সম্প্রসারিত হয় বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে।

জনাব মাঈনদ্দীন বিশ্বাস বাবু কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর থানার আল্লারদরগার একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১৯৫৬ সালে জন্ম গ্রহন করেন। আইন বিষয়ে ডিগ্রী লাভের পর তিনি ব্যবসা শুরু করেন। তিনি বিশ্বাস গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা।

আমাদের কুষ্টিয়ায় আমরা নিজেরাও জানিনা ঠিক কত গুণী মানুষের বিচরণ ছিল। তবে আমরা গর্ব করে বলতে পারি বাংলাদেশের ভিতর সবচেয়ে বেশী গুণী মানুষের জন্ম এবং বিচরণ ছিল এই বৃহত্তর কুষ্টিয়ায়। নিম্নে কিছু প্রয়াত গুণী ব্যক্তিত্ব নাম প্রকাশ করা হল। আপনাদের এর বাহিরে প্রয়াত ব্যক্তিত্ব নাম জানা থাকলে নিচে কমেন্ট করুন।

১৯২১ সালে কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের বাড়াদী গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে এডঃ আব্দুর রহিম জন্ম গ্রহন করেন। তাহার পিতা মরহুম মুন্সী হোসেন আলী ছিলেন পেশায় একজন গৃহস্ত। জনাব হোসেন আলীর দুই পুত্র মরহুম মোঃ আব্দুল করিম ও মরহুম আব্দুর রহিম এবং দুই কন্যা।

কামরুল ইসলাম সিদ্দিক (জন্মঃ ২০ জানুয়ারি ১৯৪৫, মৃত্যুঃ ১ সেপ্টেম্বর ২০০৮) বাংলাদেশের গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়নের রুপকার সাবেক সচিব প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম সিদ্দিক ১৯৪৫ সালের ২০ জানুয়ারি কুষ্টিয়ায় জন্ম গ্রহন করেন। পিতা কৃষি উন্নয়নে আমৃত্যু সংগ্রামী যোদ্ধা মরহুম নুরুল ইসলাম সিদ্দিক এবং সমাজ সেবী রত্নগর্ভা মা হামিদা সিদ্দিকার সন্তান। সিদ্দিকের শৈশব ও শিক্ষা জীবনের প্রথম অধ্যায় লালন শাহ, রবীন্দ্রনাথ এবং মীর মোশাররফ হোসেনের স্মৃতিবিজড়িত কুষ্টিয়ায়। নিজস্ব ধ্যান ধারনাকে বিশ্ব প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে দেশউপযোগী প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রাম বাংলার যুদ্ধ বিদ্ধস্ত অবকাঠামো উন্নয়নে তিনি প্রানান্ত কাজ করেছেন।

মো: হাতেম আলীর জন্ম ১৯১০ খ্রী: মৃত্যু ১৪ই বৈশাখ সোমবার ১৩৮২ বাংলা/২৮শে এপ্রিল ১৯৭৫ খ্রী:। কুষ্টিয়া থানার উদিবাড়ী মজমপুর, জেলা নদীয়া (তৎকালীন)। উত্তম নিবাস, ৭১/১ রামচন্দ্র রায় চৌধুরী ষ্ট্রীট, কোর্টপাড়া, কুষ্টিয়া। পিতা- মো: ওসমান গণি, তার মৃত্যু ১৯১৮ খ্রী:। মাতা মোছা: উত্তম নেছা, দাদা মো: কুদরত শাহ।

আব্দুল বারী বিশ্বাস (জন্মঃ ১৯৪০ সালের ২০ নভেম্বর) কুমারখালী থানার আড়পাড়া গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। পিতা আলহাজ্ব মোকাদ্দেস হোসেন। শিক্ষা জীবন বাঁশগ্রাম মাদ্রাসা, দুর্বাচারা জুনিয়র হাই স্কুল এবং কুমারখালী এম এন হাই স্কুলে লেখাপড়া করেন।