আপনাকে কুষ্টিয়াশহর.কম এর পক্ষ হতে ঈদ মোবারক 🌙। বাংলা তথ্য ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে আমাদের এই প্রয়াস। ইতিহাস এবং ঐতিহ্যর তথ্য দিতে চাইলে ক্লিক করুন অথবা ফোন করুনঃ- ০১৯৭৮ ৩৩ ৪২ ৩৩

Select your language

৪ ডিসেম্বর খোকসা মুক্ত দিবস
৪ ডিসেম্বর খোকসা মুক্ত দিবস

৪ই ডিসেম্বর খোকসা হানাদারমুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিন কুষ্টিয়ার ওই উপজেলায় বিজয়ের লাল-সবুজ পতাকা ওড়ান মুক্তিযোদ্ধারা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উপজেলা সদরের খোকসা হাই স্কুল, শোমসপুর হাই স্কুল, গণেশপুরের গোলাবাড়ীর নিলাম কেন্দ্র, মোড়াগাছা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দোসর রাজাকার বাহিনীর শক্ত ঘাঁটি ছিল। এ জনপদে হত্যা, ধর্ষণ, লুট, অগ্নিসংযোগের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওঠে এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের একটি ইউনিট। প্রথমে পাকিস্তান পুলিশ উৎখাতের উদ্দেশ্যে থানা দখলের পরিকল্পনা হয়।

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ৩ই ডিসেম্বর রাত ১১টার দিকে মুজিববাহিনীর কমান্ডার আলাউদ্দিন খান, কে এম মোদ্দাসের আলী, আলহাজ সদর উদ্দিন খান, নুরুল ইসলাম দুলাল, আলহাজ সাইদুর রহমান মন্টু, রোকন উদ্দিন বাচ্চু, তরিকুল ইসলাম তরুর নেতৃত্বে ২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা থানা দখলের জন্য চারদিক থেকে আক্রমণ করেন। রাতভর যুদ্ধের পর সকালে ৩৫ জন পুলিশ ও ৩৬০ জন রাজাকার সদস্য আত্মসমর্পণ করে।

৪ই ডিসেম্বর খোকসা থানায় বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন খোকসা জানিপুর পাইলট হাইস্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন খান, মোদ্দাচ্ছের আলী, আলহাজ সদর উদ্দিন খান, গোলাম ছরোয়ার পাতা, আলহাজ সাইদুর রহমান মন্টুসহ মুক্তিযোদ্ধারা। দখল করা প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র ও আটকদের নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদে ক্যাম্পে পৌঁছালে ৪ই ডিসেম্বর পাক হানাদারদের একটি বড় দল আবার থানা দখলের চেষ্টা করলে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে মিলিশিয়া ও পাকিস্তানি সেনাসদস্যদের দলটি খোকসা ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। হানাদারমুক্ত হয় খোকসা।

দিবসটি পালনে এ বছর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হবে।

এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার সদয় জ্ঞাপন করেছেন খোকসা উপজেলার চেয়ারম্যান আলহাজ সদর উদ্দিন খান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ সেলিনা বানু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বেতবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাবুল আখতার, খোকসা পৌরসভার মেয়র তারিকুল ইসলাম প্রমুখ।

সাবেক কমান্ডার আলাউদ্দিন খান দৈনিক কু্ষ্টিয়া কে বলেন, ‘খোকসা থানা আক্রমণের জন্য প্রায় চার’শ থেকে পাঁচশত মানুষ নিয়ে বৈঠক করি কিন্তু এর মধ্যে বেশির ভাগ মানুষ আক্রমণ করতে নিষেধ করে। এরপর ৩ই ডিসেম্বর রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার আবদুল হাই আমাকে বার্তা পাঠায় যে আজকের মধ্যে থানা আক্রমণ না করলে কিন্তু আর পারবেন না। আবদুল হাই রাজাকার হলেও আমাদের তথ্য দিত। তবে ওই দিন সন্ধ্যায় আবদুল হাইকে কিছু না বলে গোপন বৈঠক করি মুকশিতপুরের আবদুস সাত্তারের বাড়িতে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় আজ রাতেই থানা আক্রমণ করা হবে।’

আলাউদ্দিন খান আরো বলেন, ‘৩ই ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১১টার সময় খোকসা থানা আক্রমণ করি। পুলিশ আর আমাদের মধ্যে রাত ৪টা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলে। এরপর থানায় ঢুকে গ্রেনেড মারার হুমকি দিলে পুলিশ আত্মসমর্পণ করে। পুলিশের কাছ থেকে ১৩৫টা রাইফেল ও ৪৫ কার্টন গুলি পাওয়া যায়। সেখানে ৩৬০ জন রাজাকার ও ৩৫ জন পুলিশকে আটক করে মানিককাট মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে নিয়ে যাই। ৪ই ডিসেম্বর খোকসা থানা সদরে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করি।’

Add comment

কুষ্টিয়া সম্পর্কিত তথ্য

সর্বশেষ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

তথ্য সম্পর্কে খবর

আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন এবং আপডেট থাকুন
We use cookies

We use cookies on our website. Some of them are essential for the operation of the site, while others help us to improve this site and the user experience (tracking cookies). You can decide for yourself whether you want to allow cookies or not. Please note that if you reject them, you may not be able to use all the functionalities of the site.